ফিরে দেখা ২০১৯: রোর বাংলার সেরা দশ

Roar Media
-
January 1, 2020

ইতিহাস, বিজ্ঞান, রাজনীতি, শিল্প, সাহিত্য, খেলাধুলাসহ দৈনন্দিন জীবনের নানাবিধ বিষয়ে পাঠককুলের জ্ঞানতৃষ্ণা মেটাতে রোর বাংলার ২০১৯ সালের যাত্রাটি ছিল পাঠকদেরই ভালোবাসায় মোড়া। নতুন বছরের আগমনে বিগত বছরের সাফল্যকে সামনে নিয়েই এগোতে চায় রোর বাংলা। তারই অংশ হিসেবে পাঠকপ্রিয়তা ও সম্পাদনা পর্ষদের বিচারে বিগত বছরে প্রকাশিত হওয়া সেরা ১০টি আর্টিকেলের তালিকা নিয়েই আজকের এই আয়োজন।

মনের ভাঙনে ভাঙিয়া গেছে ঘর

গত জুলাইয়ের শ্রীলঙ্কা সফরে ঘটনাক্রমে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়কত্ব পেয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বিশ্বকাপ থেকেই অফ ফর্মের সাথে যুঝতে থাকা রিয়াদ সফল হননি সেবারও।

বিশ্বকাপ থেকেই অফ ফর্মের সাথে যুঝতে থাকা রিয়াদ সফল হননি শ্রীলঙ্কা সফরেও; Image Source: BCB

দলের ভেতর অন্তর্দ্বন্দ্বের গুঞ্জনও আসে প্রকাশ্যে। কী ছিল সেই গৃহবিবাদের নেপথ্যে? রিয়াদের ছন্দপতনের কারণও কি সেটিই? উত্তর খোঁজা হয়েছে এই লেখায়। ভিন্নধর্মী এ লেখাটিই পাঠকপ্রিয়তার দিক দিয়ে সর্বাগ্রে জায়গা করে নিয়েছে এই তালিকায়।

জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও মৃত্যুর গণ্ডি পেরিয়ে যে প্রেম: মির্চা এলিয়াদ ও মৈত্রেয়ী দেবী

সফল প্রেমের চেয়ে ব্যর্থ প্রেমের অসম্পূর্ণ গল্পগুলোই সবসময় মানবমনকে বেশি নাড়া দিয়েছে। ব্যতিক্রম হয়নি মির্চা আর মৈত্রেয়ীর গল্পের ক্ষেত্রেও। ভারতীয় দর্শন শিখতে কলকাতায় অধ্যাপকের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন রোমানিয়ান যুবক মির্চা। কাব্যচর্চা থেকে বন্ধুত্ব, তারপর অধ্যাপকের মেয়ে আর মির্চা বুঁদ হয়েছিল দুজন দুজনার প্রেমে। কিন্তু মৈত্রেয়ীর পরিবারের রক্ষণশীলতা বাধা হয়েছিল তাদের মিলনে। দেশে ফিরে মির্চা প্রথম প্রেমিকা নিয়ে বই লিখে চারদিকে সাড়াও ফেলে দিলেন। ওদিকে হতাশাজর্জর মৈত্রেয়ীও একটা সময় বিয়েথা করলেন। থিতু হতে চেয়েছিলেন মির্চা, সুবিধে করতে পারেননি। প্রায় চার চারটি দশক পর মৈত্রেয়ী জেনেছিলেন মির্চার লেখা বইটির কথা।

মির্চা এলিয়াদ ও মৈত্রেয়ী দেবীর অনিঃশেষ ভালোবাসা সে যুগের ধর্ম বর্ণ ও জাতের ভেদাভেদের কাছেও হার মানেনি। তারা তাদের ভালোবাসার মাঝেই বেঁচে আছেন; Image Source: iván BRAVE

আমেরিকার এক শহরে প্রকৃতির অদ্ভুত খেয়ালে দেখা হলো তাদের। হয়তো পরের জন্মে এক হবার অব্যক্ত আশ্বাস বিনিময় করে আবার যে যার ঘরে ফিরেছিলেন। ওদিকে আত্মীয়-স্বজনের নিন্দা উপেক্ষা করে মির্চার বইয়ের জবাবে নিজে আরেকটি বই লেখেন মৈত্রেয়ী। তাদের কেউই আজ বেঁচে নেই, কিন্তু তাদের সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়ে অমর হয়ে রয়ে গেছে তাদের পরিণতি; না পাওয়া গভীর প্রেমটুকু। বই দুটোর মতো তাদের প্রেম নিয়ে লিখে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে এই লেখাটিও!

ইনজুরি ও প্রেমের ফাঁদে যেভাবে ধ্বংস হলো পাতোর ক্যারিয়ার

ব্রাজিলের ঘরোয়া লিগ মাতিয়ে ১৮ বছর পূর্ণ না হতেই ইউরোপে ডাক পেয়েছিলেন আলেকজান্দ্রে রদ্রিগুয়েজ ডা সিলভা পাতো। ২০০৮-০৯, ২০০৯-১০ এই দুই মৌসুমে ইতালির ক্লাব এসি মিলানের হয়ে ইউরোপ কাঁপালেও কোচের গুডবুকে না থাকায় জায়গা হয়নি বিশ্বকাপ দলে। পরের দু'বছর চলে ইনজুরির সাথে পাতোর সংগ্রামের গল্প। একের পর এক প্রেমে মজে ফিটনেস ও শৃঙ্খলাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে যাওয়াতেই এই ছন্দপতন।

প্রতিভার সঠিক বিকাশের জন্য শৃঙ্খলা ও পরিশ্রম যে কতটা জরুরি তার যথার্থ উদাহরণ আলেকজান্দ্রে পাতো। প্রেমের খেলায় না মজে যদি ঠিকমত অনুশীলনটা করতেন, তবে হয়তো সুয়ারেজ, লেভান্ডস্কি, কেইন, আগুয়েরোর মতো স্ট্রাইকারের পাশে তার নামটাও থাকতো; Image Source: Valerio Pennicino/Getty Images

অমিত সম্ভাবনা নিয়ে জ্বলে উঠে হুট করেই যেন নিষ্প্রভ হয়ে গেলেন এই তারকা। সম্ভাবনাময় এক প্রতিভার অঙ্কুরেই বিনষ্ট হওয়ার মর্মান্তিক গল্পই বিশদে বলা হয়েছে এই লেখায়, যা কেবল একটি ঘটনাই নয়, বরং আমাদেরও শিক্ষা দেয় প্রতিভার উপযুক্ত চর্চার অভাবের করুণ পরিণতি সম্পর্কে।

দুর্ঘটনায় এক্স-রের আবিষ্কার: রন্টজেন কিংবা মানবজাতির সৌভাগ্য

আপেলের পতন থেকে অভিকর্ষ বলের ধারণা কিংবা ভারতের জলপথ আবিষ্কার করতে গিয়ে আমেরিকা আবিষ্কার- ঘটনা বলুন বা দুর্ঘটনা, যুগে যুগে আবিষ্কার কিন্তু এভাবেও হয়েছে! তাই বলে যে সেই আবিষ্কারের গুরুত্ব কমে যায়, তা কিন্তু নয়। বরং অধ্যবসায় আর মেধার কাছেই এসব ক্ষেত্রে হার মেনেছে 'কাকতাল' নামক শব্দটি। এমনই এক আবিষ্কার হচ্ছে এক্স-রে।

এক্স-রে আবিষ্কার যেন মানবজাতির জন্যে আক্ষরিক অর্থেই আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। কারণ এ আবিষ্কারটি হয়েছিল অনেকটা সৌভাগ্যবশত, আকস্মিকভাবে। না চাইতেও এটি ধরা দিয়েছে মানুষের কাছে; Image Source: The Conversation

চিকিৎসা ও গবেষণার নানা কাজে যে এক্স-রে ছাড়া আমাদের বর্তমান সময় প্রায় অকল্পনীয়, সেই এক্স-রেও আবিষ্কার হয়েছে দুর্ঘটনাক্রমে! বিজ্ঞানী উইলহেলম রন্টজেন ক্যাথোড রশ্মি নিয়ে উচ্চতর গবেষণা চালাতে চালাতেই নিজের গবেষণাগারে অকস্মাৎ আবিষ্কার করেন এক অদ্ভুত রশ্মি! এক্স-রে আবিষ্কারের নাটকীয়তায় পূর্ণ গল্পটি নিয়েই এই লেখা, যা যেকোনো পাঠককে পরিচিত করিয়ে দেবে বিজ্ঞান জগতের অবিস্মরণীয় একটি ঘটনার সাথে।

জাদুকর সামাদ: বাংলার একজন অতিমানব

একজন ফুটবলারের উপাধি যদি হয় 'জাদুকর', তবে কী পরিমাণ মোহনীয়তা তিনি ফুটবল পায়ে ছড়িয়েছিলেন, সেটির ব্যাখ্যাই নিষ্প্রয়োজন। ভাগ্যকে তিনি দুষতেই পারেন, কেন আরো পরে জন্মালেন না! বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় যাদের জন্ম আর বিকাশ, আর্কাইভে কতটুকুই বা থাকবেন তারা! জাদুকর সামাদের বেলায় তা-ই ঘটেছিল। দেশ-বিদেশের ঘরোয়া লিগ মাতিয়েছেন, অখণ্ড ব্রিটিশ ভারতের হয়ে দম্ভ চূর্ণ করেছেন ইংরেজেরও।

জাদুকরের মতো কাজগুলো প্রায় প্রতিনিয়তই করতেন উনিশ শতকের শুরুর দিকে এক বাঙালি ফুটবলার। তার নাম সৈয়দ আবদুস সামাদ। ম্যাজিশিয়ান কিংবা জাদুকর উপাধি আরো অনেক খেলোয়াড় পেলেও সামাদের সাথে উপাধিটা নামের অংশে পরিণত হয়ে গিয়েছিল; Image Source: The Daily Star

বিহারে জন্ম হলেও দেশভাগের পর স্থায়ী আবাস গেড়েছিলেন দিনাজপুরের পার্বতীপুরে। আজও তাকে ঘিরে শোনা যায় অসংখ্য কিংবদন্তি। সেই জাদুকরের জাদুকরী জীবনের গল্পটাই তুলে আনা হয়েছে এই লেখায়।

খালেদ মোশাররফ: মুক্তিযুদ্ধে গেরিলা যোদ্ধাদের 'গার্ডিয়ান এঞ্জেল'

পশ্চিম জার্মানি থেকে উচ্চতর সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরেছিলেন দেশে। চাইলেই পারতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর উচ্চপদে থেকে আরাম আয়েশে দিন কাটিয়ে দিতে। কিন্তু জন্মভূমির দুর্দিনে এতটা স্বার্থপর হতে পারেননি খালেদ মোশাররফ। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি অফিসারদের সংগঠিত করে নিজেই বনে যান প্রত্যক্ষ যুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার।

মুক্তিযোদ্ধাদেরকে নিয়ে আক্রমণের পরিকল্পনা সাজাচ্ছিলেন খালেদ মোশাররফ © Marilyn Silverstone

এখানেই শেষ নয়, ঢাকার অভিজাত এলাকার শিক্ষিত মধ্যবিত্ত-নিম্ন মধ্যবিত্ত কিশোর-যুবাদের নিয়ে গড়ে তোলেন দুর্ধর্ষ গেরিলা বাহিনী। দূরদর্শী পরিকল্পনায় এই গেরিলাদের দিয়েই ভণ্ডুল করেছিলেন পাক বাহিনীর শত শত রণকৌশল। যুদ্ধের শেষ দিকে আহত হয়ে দেশ ছাড়তে হলেও স্বাধীন দেশে বীরের বেশেই ফিরে এসেছিলেন খালেদ মোশাররফ। পেয়েছিলেন বীর উত্তম খেতাব। ঘাতকের নির্মমতায় সদ্য স্বাধীন দেশ দ্রুতই হারিয়েছিল তার এই সূর্য সন্তানকে। একাত্তরের রণাঙ্গনে এই বীরের বীরত্বগাথা নিয়েই সাজানো হয়েছে পুরো লেখাটি।

চা শ্রমিক: জন্ম জন্মান্তরের দুষ্টচক্রে বাঁধা যাদের জীবন

প্রায় ১৭০ বছর আগে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থান থেকে দরিদ্র নিম্নবর্ণের হিন্দুদের শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল সিলেটের চা বাগানগুলো। সময়ের ফেরে চা শিল্পে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে বটে, কিন্তু দিন বদলায়নি চা শ্রমিকদের। বরং প্রজন্মগতভাবে তারা আটকে গেছেন এক ইঁদুরের কলে, যেখানে ঢোকা যায়, বের হওয়া যায় না! সমাজের মূলধারা থেকে আগত নয় বলে চা বাগানের অস্থায়ী জায়গাটুকুর বাইরে কোথাও তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই।

চা শ্রমিকদের জীবন বাঁধা পড়েছে চা বাগানেই © Md Arifur Rahman

মালিকের অনুকম্পাই যেন তাদের জীবন। আবার অতি স্বল্প মজুরীর কারণে ভাগ্যোন্নয়নের জন্য শ্রমিকেরা যে পড়াশোনা শিখবেন বা সমাজের মূলধারায় বসতবাড়ি করবেন, তা-ও সম্ভব হয় না। তাই বাধ্য হয়েই প্রজন্মের পর প্রজন্ম বাগানেই শ্রমিক হিসেবে কাজ করে যেতে হয় তাদের। চা শ্রমিকদের এই অভিশপ্ত জীবনের কথাই উঠে এসেছে আলোচ্য লেখায়।

সাইদা খানম: আজন্ম যাপন যার ক্যামেরার সঙ্গে

কার ছবি তোলেননি তিনি! মাদার তেরেসা, মার্শাল টিটো, অড্রে হেপবার্ন, রানী এলিজাবেথ ছাড়াও প্রথম চন্দ্রবিজয়ী তিন নভোচারীও তার ফ্রেমবন্দী হয়েছেন। সেই সঙ্গে দেশের ইতিহাসের কিংবদন্তি নেতা ও শিল্পীরা তো আছেনই। কাজ করেছেন সত্যজিৎ রায়ের সিনেমার সেটে।

ইতিহাসের ছবি ধরে রাখার প্রত্যয়ে যে মানুষটি কাজ শুরু করেছিলেন, বাংলাদেশের আলোকচিত্রের ইতিহাসে তিনি এখন পরিণত হয়েছেন এক অনস্বীকার্য অংশে; Image Source: Aho Nouroz

ফটোসাংবাদিকতার সাথে কাটিয়ে দিয়েছেন দীর্ঘ ছয়টি দশক! পাকিস্তান আমলের রক্ষণশীলতায় নারী হিসেবে আলোকচিত্রী হিসেবে উঠে আসার পথটা সহজ ছিল না। কিন্তু কঠিনেরেই যে ভালোবেসেছিলেন সাইদা খানম! ক্যামেরা হাতেই সর্বত্র ছুটে বেড়িয়েছেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়।  দেশের ইতিহাসের প্রথম পেশাদার আলোকচিত্রীর বর্ণাঢ্য জীবনের গল্পই ফুটিয়ে তোলে চমৎকার এই লেখাটি।

হেনরিয়েটা ল্যাকস এবং হেলা কোষ: বিজ্ঞানের তরে এক মহীয়সীর অসামান্য ত্যাগের গল্প

বিজ্ঞানাগারে সংরক্ষণ করা গেলে মানবকোষ বড়জোর একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত টিকে থাকে। কোষের স্থায়িত্বের অভাবে জীববিজ্ঞানের অনেক গবেষণাই ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন হতো না। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে যখন হেনরিয়েটা মারা যান, তখনও তিনি জানতেন না, কী বিস্ময় তিনি রেখে যাচ্ছেন মানবজাতির জন্য। তার ক্যান্সারাক্রান্ত কোষের নমুনা সংগ্রহে রেখেছিলেন এক গবেষক। নিজের গবেষণাগারে তিনিই প্রথম লক্ষ্য করলেন, হেনরিয়েটার কোষ নষ্ট হওয়া তো দূরের কথা, দিনকে দিন স্ব-বিভাজনের দ্বারা আরো বেড়ে উঠছে!

পোলিও টিকার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান যার, তিনি হেনরিয়েটা ল্যাকস নামক এক অবহেলিত নারী। ইতিহাস তাকে একদম ভুলে বসেছিলো; Image Source: WYPR

উল্লেখ্য, বিশেষ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা গেলে মানবকোষ একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্তই কেবল টিকে থাকতে পারে। এই নশ্বরতার কারণে পূর্বে জীববিজ্ঞানের অনেক জটিল গবেষণাই সম্ভব হতো না। হেনরিয়েটার 'অমর' কোষ গবেষণার সেই সীমাবদ্ধতা ঘুচিয়ে দেয়। সেই একটিমাত্র নমুনা থেকে হাজার হাজার কোষ উৎপাদন করা শুরু হয়। রপ্তানি হতে থাকে বাণিজ্যিকভাবে। পোলিও টিকাসহ অসংখ্য যুগান্তকারী আবিষ্কারের প্যাটেন্টের সাথে জড়িয়ে আছে এই কোষের অবদান। বিস্ময়কর সেই 'হেলা' কোষের পেছনের গল্প নিয়েই সাজানো হয়েছে এই লেখাটি।

কাপ্তাই বাঁধ এবং জলবিদ্যুৎ প্রকল্প: আদিবাসীদের বাস্তুচ্যুত হওয়ার ইতিহাস

প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিল ব্রিটিশ আমল থেকেই৷ বাস্তবায়ন হয় ষাটের দশকে, পাকিস্তান আমলে। পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদনের আশায় গড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণেই ছিল গুরুতর ত্রুটি। ফলস্বরূপ, বাঁধ বানাতেই প্লাবিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রামের চল্লিশভাগ কৃষি উপযোগী জমি। বাস্তুচ্যুত হয় প্রায় এক লক্ষ মানুষ, যাদের অধিকাংশই আদিবাসী। অর্থ, ভূমি আর সদিচ্ছার সেই এক লক্ষ মানুষের পুনর্বাসনটাও ঠিকঠাক হয়নি।

বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেই ব্যাপারটি পুরোপুরি সম্ভব না হওয়ায় সমস্যা ঘনীভূত হয়েছে। কাপ্তাই বাঁধ এবং জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ফলে কর্ণফুলীর ভাটির সমতলের চাষীরা লাভবান হয়েছে, মাছ চাষ আর বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে পর্যটকদের সমাদর পেয়েছে স্থানটি। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় রয়ে গেছে লক্ষাধিক আদিবাসীর নিজেদের বাস্তুভিটা ও আবাদভূমি হারানোর কান্না; Image Source: Wikimedia Commons

অনেকে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিলেন ভারতের উত্তর-পূর্বে, সেখানেও তাদের মেলেনি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। আজও টিকে আছে দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি। কিন্তু তার পেছনে লুকিয়ে আছে পাহাড়ের কান্নার ইতিহাস। ইতিহাসের সেই মর্মান্তিক পাতাগুলোই তুলে আনা হয়েছে এই লেখায়।

END OF ARTICLE
If you found this article interesting and want to share it with your network, we have made it slightly more easier for you to do so
Subscribe!
Subscribe to the Roar Global Newsletter to stay updated on our latest company announcements and our take on the future of media in the region
Related articles